পহেলা বৈশাখ মানে বাঙালির প্রাণের উৎসব। শত দুঃখ, কষ্ট ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে নানা আয়োজনে মেতে উঠেছে খুলনাবাসী। আনন্দ-আয়োজন, মেলা আর নতুন বছরে নতুন পোশাক দিয়ে বছরের প্রথম দিনটাকে রঙিন করে তুলতে প্রস্তুত সবাই। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে বর্ষবরণের উৎসবের ঢেউয়ে ভাসতে শুরু করেছে সমগ্র খুলনা।
বিগত বছরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নববর্ষের দিন সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ বরণ করতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নববর্ষের আগের দিন রোববার বিকেল ৪টায় ক্যাম্পাসে ঘুড়ি উৎসব।
এরপর পহেলা বৈশাখ সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
বাংলা নববর্ষের অন্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টায় বর্ষবরণ সঙ্গীতানুষ্ঠান, সকাল ৯টায় নববর্ষের শোভাযাত্রা (শিববাড়ী মোড় থেকে ময়লাপোতা হয়ে রয়েল চত্ত্বর) এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় বানরখেলা, লাঠিখেলা, ম্যাজিক-শো, নাগরদোলা, পুতুল নাচ ইত্যাদির আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে আয়োজিত এ মেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্টলের ব্যবস্থা রয়েছে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ‘পহেলা বৈশাখ-১৪২১ শুভ নববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ নানাবিধ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ক পরিচালকের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে ও তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল ভবনের মধ্যবর্তী প্রাঙ্গণে রকমারি আয়োজনে সাজানো হবে বৈশাখী মেলা।
বৈশাখী মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের অংশগ্রহণে খাঁটি দেশীয় খড়মাটির কুঠি বানিয়ে দেশীয় ঐতিহ্যের পান্তা-ইলিশ, গ্রাম বাংলার ষড়ঋতুর আকর্ষণীয় বিভিন্ন আয়োজন, দেশীয় পিঠা তৈরি ও প্রদর্শনী ইত্যাদি নানাবিধ বর্ণিল আয়োজন রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বর্ষবরণ সংগীতানুষ্ঠান এবং সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। পালকি, ঢোল-তবলা, একতারা, দোতারা, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র, গরুর গাড়ী, দেশীয় সংস্কৃতির ছবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, মুখোশসহ আরও অনেক আয়োজনে মিলনায়তন প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ফুলবাড়ী গেট সহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিলনায়তনের সম্মুখে এসে শেষ হবে।
শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন কুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (বাউল সঙ্গীত), সাপ খেলা, বানর খেলা, ম্যাজিক শো, ট্রেসার হান্ট ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মোরগ লড়াই, কাবাডি খেলা, ঘুড়ি উৎসবসহ ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর উপস্থিত থেকে আকর্ষণীয় এসব প্রতিযোগিতা উপভোগ করবেন এবং বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করবেন।
সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নানাবিধ কর্মসূচি পালন করবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নববর্ষ বরণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী খুলনা জেলা সংসদ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পহেলা বৈশাখ সকাল সাড়ে ৬টায় নগরীর সার্কিট হাউজ ও জজকোর্ট সংলগ্ন সড়কে প্রভাতী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে পঞ্চকবির গানের সঙ্গে থাকবে লালন সাঁই, হাসন রাজা, রাধারমন দত্ত, বিজয় সরকার, গগন হরকরা, শাহ আব্দুল করিম, আব্বাস উদ্দিন, আব্দুল আলিম, সাধন সরকার ও সাঁওতালী গান।
প্রভাতী অনুষ্ঠান শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও উদীচী কার্যালয়ে বৈশাখী আপ্যায়ন করা হবে।
এছাড়া, খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র জাতিসংঘ শিশু পার্কে বসবে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) আয়োজনে সকালে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে রয়েছে বর্ষবরণ প্রীতিভোজ ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রূপান্তর ও বর্ষবরণ পর্ষদ’র যৌথ আয়োজনে সকালে ডা. শহীদ মিলন চত্বর (সাত রাস্তার মোড়) থেকে শুরু হবে বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। পরে থাকছে প্রধান কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুরূপভাবে নগরীর আজম খান কমার্স কলেজ, লোসাউক, আব্বাস উদ্দিন একাডেমি, আর্ট স্কুল, নর্দান ইউনির্ভারসিটি, জেলা আইনজীবী সমিতি, মানবাধিকার সংরক্ষণ কমিশন, লেখক শিবির, খুলনা সাহিত্য কেন্দ্র, প্রতিনিধি সংস্থা, ব্যাংক এশিয়া, জনতা ব্যংক, সোনালী ব্যাংক, খুলনা আর্ট একাডেমি, নাট্য নিকেতন, রাইটার্স ক্লাব, ভূঁইয়া কম্পিউটারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্কুল-কলেজ, উন্নয়ন সংস্থা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বর্ষবরণের বিভিন্ন আয়োজন করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে-বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠাণ, মেলা, লোকখেলা, লোকগান ও পান্তা খাওয়া পর্ব।
এ দিন খুলনার হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতেও বিক্রি হবে নববর্ষের খাবার।
এদিকে, নগরীর মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলোতে চলছে বৈশাখী পোশাক ও পণ্যের রমরমা বেচাকেনা।
এছাড়া, রূপসা ব্রিজ, গিলাতলা চিড়িয়াখানা, খালিশপুর শিশুপার্ক ও মুজগুন্নী শিশুপার্কসহ নগরীজুড়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন। ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিয়েছেন হালখাতা অনুষ্ঠানের।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অর্পণা রায় বাংলানিউজকে বলেন, নতুন বছরের দিনটিকে বাঙালি সাজিয়ে নেয় নতুন অলংকারে ও নতুন ব্যঞ্জনায়। পেছনের ক্লেদ-কালিমা অথবা দুঃখ-অভাব কিংবা ভুলের যন্ত্রণা পেছনে ফেলে মানুষ এগিয়ে যেতে চায় সামনের দিকে। তেমনি প্রত্যয়ে উদ্ভাসিত হয়ে তারা নতুন স্বপ্নে বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ফ্যাশন হাউজ তিরানসের মালিক তন্ময় শাহরিয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখ বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব। তাই দেশীয় জিনিসের ব্যবহারে সহজেই আনা যায় বৈশাখী আমেজ। বৈশাখী রঙ লাল সাদা হলেও কমলা, হলুদ, বাসন্তী, লাইমগ্রিন, মেরুন, ব্রাউন, আলিভ ইত্যাদি রং দিয়ে আমাদের কৃষ্টি-কালচার, ঐতিহ্য লোক শিল্পকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ফ্যাশান হাউজের পোশাকগুলোতে। এ কারণে তরুণ-তরুণীদের হাউজে আনাগোনা বেশি।
বড় বাজার ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, শেষ মুহূর্তে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। সাদা ফতুয়া ও লাল ধুতির সঙ্গে ফতুয়ার ওপরে একতারা, তবলা, দোতারা ছাপানো পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আর এসব পোশাকের দাম ২শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে।
এদিকে নির্বিঘ্নে ও উৎসব মুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। বর্ষবরণের প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাংলা নববর্ষ নির্বিঘ্নে ও আনন্দমুখর পরিবেশে যাতে উদযাপন করা যায় সেজন্য পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট বাহিনী সজাগ ও সর্তক রয়েছে। মেলা ও বর্ষবরণের উৎসবের স্থান, শপিং সেন্টার, মার্কেট, বড় বাজার, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা রয়েছে।
বিগত বছরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নববর্ষের দিন সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ বরণ করতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নববর্ষের আগের দিন রোববার বিকেল ৪টায় ক্যাম্পাসে ঘুড়ি উৎসব।
এরপর পহেলা বৈশাখ সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
বাংলা নববর্ষের অন্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টায় বর্ষবরণ সঙ্গীতানুষ্ঠান, সকাল ৯টায় নববর্ষের শোভাযাত্রা (শিববাড়ী মোড় থেকে ময়লাপোতা হয়ে রয়েল চত্ত্বর) এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় বানরখেলা, লাঠিখেলা, ম্যাজিক-শো, নাগরদোলা, পুতুল নাচ ইত্যাদির আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে আয়োজিত এ মেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্টলের ব্যবস্থা রয়েছে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ‘পহেলা বৈশাখ-১৪২১ শুভ নববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ নানাবিধ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ক পরিচালকের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে ও তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল ভবনের মধ্যবর্তী প্রাঙ্গণে রকমারি আয়োজনে সাজানো হবে বৈশাখী মেলা।
বৈশাখী মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের অংশগ্রহণে খাঁটি দেশীয় খড়মাটির কুঠি বানিয়ে দেশীয় ঐতিহ্যের পান্তা-ইলিশ, গ্রাম বাংলার ষড়ঋতুর আকর্ষণীয় বিভিন্ন আয়োজন, দেশীয় পিঠা তৈরি ও প্রদর্শনী ইত্যাদি নানাবিধ বর্ণিল আয়োজন রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বর্ষবরণ সংগীতানুষ্ঠান এবং সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। পালকি, ঢোল-তবলা, একতারা, দোতারা, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র, গরুর গাড়ী, দেশীয় সংস্কৃতির ছবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, মুখোশসহ আরও অনেক আয়োজনে মিলনায়তন প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ফুলবাড়ী গেট সহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মিলনায়তনের সম্মুখে এসে শেষ হবে।
শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন কুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মিলনায়তন প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (বাউল সঙ্গীত), সাপ খেলা, বানর খেলা, ম্যাজিক শো, ট্রেসার হান্ট ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মোরগ লড়াই, কাবাডি খেলা, ঘুড়ি উৎসবসহ ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর উপস্থিত থেকে আকর্ষণীয় এসব প্রতিযোগিতা উপভোগ করবেন এবং বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করবেন।
সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নানাবিধ কর্মসূচি পালন করবে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নববর্ষ বরণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী খুলনা জেলা সংসদ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পহেলা বৈশাখ সকাল সাড়ে ৬টায় নগরীর সার্কিট হাউজ ও জজকোর্ট সংলগ্ন সড়কে প্রভাতী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে পঞ্চকবির গানের সঙ্গে থাকবে লালন সাঁই, হাসন রাজা, রাধারমন দত্ত, বিজয় সরকার, গগন হরকরা, শাহ আব্দুল করিম, আব্বাস উদ্দিন, আব্দুল আলিম, সাধন সরকার ও সাঁওতালী গান।
প্রভাতী অনুষ্ঠান শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও উদীচী কার্যালয়ে বৈশাখী আপ্যায়ন করা হবে।
এছাড়া, খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র জাতিসংঘ শিশু পার্কে বসবে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) আয়োজনে সকালে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে রয়েছে বর্ষবরণ প্রীতিভোজ ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রূপান্তর ও বর্ষবরণ পর্ষদ’র যৌথ আয়োজনে সকালে ডা. শহীদ মিলন চত্বর (সাত রাস্তার মোড়) থেকে শুরু হবে বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। পরে থাকছে প্রধান কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুরূপভাবে নগরীর আজম খান কমার্স কলেজ, লোসাউক, আব্বাস উদ্দিন একাডেমি, আর্ট স্কুল, নর্দান ইউনির্ভারসিটি, জেলা আইনজীবী সমিতি, মানবাধিকার সংরক্ষণ কমিশন, লেখক শিবির, খুলনা সাহিত্য কেন্দ্র, প্রতিনিধি সংস্থা, ব্যাংক এশিয়া, জনতা ব্যংক, সোনালী ব্যাংক, খুলনা আর্ট একাডেমি, নাট্য নিকেতন, রাইটার্স ক্লাব, ভূঁইয়া কম্পিউটারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্কুল-কলেজ, উন্নয়ন সংস্থা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বর্ষবরণের বিভিন্ন আয়োজন করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে-বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠাণ, মেলা, লোকখেলা, লোকগান ও পান্তা খাওয়া পর্ব।
এ দিন খুলনার হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতেও বিক্রি হবে নববর্ষের খাবার।
এদিকে, নগরীর মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলোতে চলছে বৈশাখী পোশাক ও পণ্যের রমরমা বেচাকেনা।
এছাড়া, রূপসা ব্রিজ, গিলাতলা চিড়িয়াখানা, খালিশপুর শিশুপার্ক ও মুজগুন্নী শিশুপার্কসহ নগরীজুড়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন। ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিয়েছেন হালখাতা অনুষ্ঠানের।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অর্পণা রায় বাংলানিউজকে বলেন, নতুন বছরের দিনটিকে বাঙালি সাজিয়ে নেয় নতুন অলংকারে ও নতুন ব্যঞ্জনায়। পেছনের ক্লেদ-কালিমা অথবা দুঃখ-অভাব কিংবা ভুলের যন্ত্রণা পেছনে ফেলে মানুষ এগিয়ে যেতে চায় সামনের দিকে। তেমনি প্রত্যয়ে উদ্ভাসিত হয়ে তারা নতুন স্বপ্নে বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ফ্যাশন হাউজ তিরানসের মালিক তন্ময় শাহরিয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখ বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব। তাই দেশীয় জিনিসের ব্যবহারে সহজেই আনা যায় বৈশাখী আমেজ। বৈশাখী রঙ লাল সাদা হলেও কমলা, হলুদ, বাসন্তী, লাইমগ্রিন, মেরুন, ব্রাউন, আলিভ ইত্যাদি রং দিয়ে আমাদের কৃষ্টি-কালচার, ঐতিহ্য লোক শিল্পকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ফ্যাশান হাউজের পোশাকগুলোতে। এ কারণে তরুণ-তরুণীদের হাউজে আনাগোনা বেশি।
বড় বাজার ফ্যাশন হাউসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, শেষ মুহূর্তে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। সাদা ফতুয়া ও লাল ধুতির সঙ্গে ফতুয়ার ওপরে একতারা, তবলা, দোতারা ছাপানো পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আর এসব পোশাকের দাম ২শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে।
এদিকে নির্বিঘ্নে ও উৎসব মুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। বর্ষবরণের প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাংলা নববর্ষ নির্বিঘ্নে ও আনন্দমুখর পরিবেশে যাতে উদযাপন করা যায় সেজন্য পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট বাহিনী সজাগ ও সর্তক রয়েছে। মেলা ও বর্ষবরণের উৎসবের স্থান, শপিং সেন্টার, মার্কেট, বড় বাজার, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা রয়েছে।